
আপনি খুব ভালো একটা ভ্রু মেকআপ চান কিন্তু নিজের মেকআপের দক্ষতা নিয়ে কী আপনার মধ্যে সন্দেহ রয়েছে? কম সমস্যাজনক প্রসাধনীগুলি দিয়ে শুরু করুন আর ভ্রু পাউডার লাগিয়ে ফেলুন! এটা হচ্ছে ভ্রু মেকআপের সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি, একটা সন্ধেতেই এই মেকআপে আপনি মাস্টার হয়ে যেতে পারবেন! একটি খুব ভালো মানের মোম সহ একটা ব্রো পাউডার কিট বেছে নিন আর কাজে লেগে পড়ুন – আমাদের টিউটোরিয়াল দেখে নিন আর দেখুন এটা কতটা সহজ!
ব্রো পাউডার – প্রথম আইব্রো মেকআপ কিট হিসেবে একদম পারফেক্ট
নতুন যারা আইব্রো মেকআপ করতে চান তাদের জন্য ব্রো পাউডার দারুন একটি প্রসাধনী। এক্ষেত্রে দুটি শেডের একটি খুব ভালো রঙের ম্যাট পাউডার বেছে নিতে ভুলবেন না। বাস্তবে, এই কিটে একে অপরের সঙ্গে মিলে যেতে পারে এমন দুটি শেড ও ক্লিয়ার ওয়াক্স বা স্বচ্ছ মোম থাকা উচিৎ, তা দিয়ে আপনি বিভিন্ন রকম মেকআপ এফেক্ট তৈরী করতে পারবেন, আপনার মেকআপ নিশ্চিতভাবে অনেকক্ষণ থাকবে। এই দুটি শেড আপনার ভ্রু-যুগলকে সুন্দর করে তুলবে ও স্বাভাবিক দেখানোর মত এফেক্ট তৈরী করবে।
ব্রো মেকআপের জন্য পাউডার কেন বেছে নেবেন?
ভ্রু-জোড়াকে সুক্ষ্ম করতে ও যাতে অতিরিক্ত মেকআপ করা হয়েছে এমন মনে না হয় তার জন্য ব্রো পাউডার হচ্ছে সবচেয়ে বড় সমাধানের উপায়। পাউডার দিয়ে ভ্রু মেকআপ করলে হালকা করে আর্চদুটিকে আকর্ষনীয় করে, সুনির্দিষ্ট সঠিক শেপ দেওয়া যায়। পাউডারটি এমন জিনিস দিয়ে তৈরী যা দিয়ে খুব সহজেই টাচ-আপ বা খুঁত ঢেকে ফেলা যায়। ব্রো মেকআপ পাউডার ব্যবহারে আপনার মুখে একটা চমৎকার ভারসাম্য আসে এবং মুখের বৈশিষ্ট্যগুলিও নজরে পড়ে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল সেরা ব্রো মেকআপ কিটটি বেছে নেওয়া। এতে স্বাভাবিক দেখতে শেড ও অনেকক্ষণ মেকআপ ধরে রাখার গুণ থাকতে হবে। এতে কোমল ফর্মুলার বিল্ট-ইন ওয়াক্স বা হাইলাইটার এবং খুব ভালো রঙের মখমলি পাউডার থাকতে হবে। আর একদম এটাই আছে ন্যানোব্রো আইব্রো পাউডার কিটে। এটা ভ্রু মেকআপের সেরা সেরা জিনিস, যা প্রোফেশনাল কাজে এবং বাড়িতে উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যায়।
ব্রো পাউডার এবং ওয়াক্স – দুটিকে কেন একসাথে ব্যবহার করতে হবে?
ব্রো মেকআপে আইব্রো ওয়াক্স বা মোম রাখার একটা কারণ আছেঃ মেকআপ কে অনেকক্ষণ ধরে রাখতে বা যদি আপনার ভ্রু অনিয়ন্ত্রিত হয় এবং একে স্টাইল করা মুশকিল হয় তবে এই পণ্যটি খুব কাজে লাগে। সেক্ষেত্রে পাউডার লাগানোর আগে মোম লাগিয়ে স্টাইল করা খুব ভালো উপায়। এই পণ্যটি ভ্রুকে সঠিকভাবে গুছিয়ে তুলতে পারে এবং পরবর্তী স্টাইল যেমন যখন আপনি ভ্রু-কে খুব বেশি রকম বোল্ড করে তুলতে চান এবং একইসঙ্গে এই এফেক্ট অনেকক্ষণ রাখতে চান সেই স্টাইল খুব সহজেই করা যায়। এর বাইরে, ভালো মোম আপনার ভ্রু-জোড়াকে যত্ন ও পুষ্ট করে, এবং কোনরকম ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করে, ভ্রু-যুগলকে আরো ঘন ও ভরাট করে তোলে। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, ওয়াক্স পাউডারের জন্য খুব ভালো বেস হিসেবে কাজ করে – এর স্থায়িত্ব বাড়ায় এবং এতে ভ্রু-তে নিশ্চিতভাবে স্বাভাবিক দেখতে একটা ফিনিশ আসে। বেস হিসেবে মোম যদি না লাগান তবে আপনি কিন্তু ফাঁকা জায়গাগুলি ভরাট করতে পারবেন না কারণ পাউডার ত্বকে পুরোপুরি লেগে থাকবে না বা এর এফেক্টটিও বেশিক্ষণ থাকবে না।
হাইলাইটার সহ আইব্রো পাউডার – পারফেক্ট ব্রো মেকআপ কিট
একদম সঠিক মাত্রায় রঙিন ও খুব ভালো করে ছড়িয়ে যায় এমন কিছু পাউডার আছে যা ব্যবহারের আগে ওয়াক্স বা মোম লাগানোর দরকার নেই। এগুলি খুব সুন্দরভাবে আপনার ভ্রুর চুলগুলিকে ধরে রাখতে পারে, খুব বেশি পরিমাণে সম্পৃক্ত এবং ব্যবহার করা যথেষ্ট আরামদায়ক। সেরা জিনিসটিতে ওয়াক্সের বদলে হাইলাইটার থাকে। এটিকে ভ্রুর হাড়ের ঠিক নিচে, ভ্রুর লাইনের নিচে লাগান উচিৎ। এই কৌশলটি খুব সুন্দরভাবে পুরো ভ্রু কে হাইলাইট করতে পারবে এবং ভ্রুকে ওপরের দিকে তুলে দেওয়ার একটা এফেক্ট দেবে, এতে মুখে একটা তাজা ও তরুণ চেহারা ফুটে উঠবে। স্ক্যালপেল ছাড়া ভ্রু-জোড়াকে তুলে দেওয়ার এফেক্ট তৈরী করতে মেকআপ আর্টিস্টরা এই কৌশলটি নিতে বলেন।
পাউডার ও ওয়াক্স দিয়ে ব্রো মেকআপ টিউটোরিয়াল – ধাপে ধাপে নির্দেশিকা
১। একটি শুকনো স্পুলি দিয়ে আপনার ভ্রু ভালো করে ব্রাশ করে নিন। ভ্রুর বৃদ্ধির দিক টিকে অনুসরণ করে ব্রাশ করুন।
২। যদি আপনার কিটে মোম থাকে তবে ব্রাশ অল্প একটু নিয়ে ছোট ছোট স্ট্রোকে ভ্রু তে পছন্দসই শেপ অনুযায়ী ব্রাশ করুন। যদি আপনি আরো বেশি সুনির্দিষ্ট ভ্রুর এফেক্ট চান, তবে মোমের আরো এক পরত লাগান।
৩। ব্রো পেনসিল বা পোমেড নিন এবং হালকা করে ভ্রু আউটলাইন করুন, নিচের ও ওপরের ভ্রু লাইনের ওপর বেশি করে নজর দেবেন। আপনার মুখের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে যাতে ভ্রুর সামঞ্জস্য থাকে সেটা দেখে নিতে ভুলবেন না।
টিপস
যদি আপনি শুধুমাত্র ব্রো পাউডার কিট দিয়েই ভ্রুর মেকআপ করেন, মোমের সঙ্গে পাউডার মিশিয়ে ভ্রুর আর্চদুটি আউটলাইন করে নিতে পারেন – ত্বকে পরিষ্কার করে স্ট্রোক দেওয়ার জন্য মোম ও পাউডারের ঘনত্ব যথেষ্ট থাকে। এর জন্য আপনার চাই একটি ছোট, চ্যাপ্টা, বাঁকানো ব্রাশ – সরু চুলের মত স্ট্রোক দেওয়ার জন্য যা একদম সঠিক জিনিস।
৪। এবার ভ্রু-জোড়াকে ভরাট করতে হবে। গাঢ় রঙের শেডটি দিয়ের ভ্রুর শেষের অংশ ভরাট করুন। গালে যাতে পাউডার না লেগে যায় বা আউটলাইনের বাইরে না বেরিয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।
৫। আর্চের মাঝের দিকে হালকা করে পাউডার লাগান – চেষ্টা করুন যাতে ওখানে কম গাঢ় শেডের পাউডার লাগানো হয়।
৬। এবার হালকা শেডের শ্যাডো রঙ নিন এবং আর্চের মাঝখানে লাগান। বাইরের ভ্রু-র প্রান্তের বাইরের দিক লক্ষ্য করে শেড লাগান। এই জায়গাটি একদম হালকা করে হাইলাইট করতে হবে। হালকা শেডের এফেক্ট থেকে স্বাভাবিক দেখতে এবং একই সঙ্গে একটা প্রোফেশনাল ফিনিশ আসবে।
৭। শেষ পর্যায়ে আপনার ভ্রু-জোড়াকে সেট করতে লাগবে স্বচ্ছ বা হালকা রঙের ব্রো জেল। এই কৌশলটি আপনার ভ্রু-যুগলকে আরো ঝকঝকে করে তুলবে, গুছিয়ে দেবে এবং সারাদিন একইরকম রেখে দেবে। মনে রাখবেন একে খুব হালকা করে লাগাতে হবে – আপনি চাইবেন আপনার পাউডার যাতে ঘেঁটে না যায়। আপনি ভ্রু-জোড়াকে আর একটুখানি সুনির্দিষ্ট করে তুলতে চাইলে অল্প হাইলাইটার দিনঃ হালকা করে ভ্রুর হাড়ের নিচে লাগান। ব্যস হয়ে গেছে! পাউডার দিয়ে আপনার ভ্রুকে সুন্দর এবং পারফেক্ট করে তোলার মেকআপ শেষ!
ভ্রু মেকআপে কী সাধারণ আই শ্যাডো ব্যবহার করা চলে?
অনেকেই একথা জিজ্ঞেস করেন কারণ প্রত্যেকটি মেকআপ কিটেই বাদামী আইশ্যাডো থাকে। ভ্রু মেকআপে কী আইশ্যাডো লাগানো যায়? সাধারণভাবে বলা যায় এটা ঠিক নয় – সাধারনত এর ফর্মুলা একটু অন্যরকম এবং প্রায়শই এতে চকচকে দেখতে জিনিস থাকে বা এতে যে সমস্ত শেড আছে তা স্বাভাবিক ভ্রুর জন্য ঠিক নয়। তাই, বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ব্রো পাউডারই ভালো এফেক্ট তৈরী করে, কারণ এতে সমানভাবে ভরাট করা যায় এবং এর ব্যবহারে ভ্রু হয়ে ওঠে স্বাভাবিক দেখতে সুন্দর একজোড়া ভ্রু।